বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের পর গত ৪০ বছরে ইরানের জনগণ শত্রুদের বহু ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেছে এবং এ অবস্থা কখনো থেমে থাকেনি। এ কারণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বিরাজমান হুমকি মোকাবেলায় সবসময় প্রকৃত শত্রুকে চেনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। অতীতের ঘটনাবলী এবং বর্তমানের কিছু ঘটনা থেকে বোঝা যায় ইরান ও ইরানের শাসন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য শত্রুরা একের পর এক নীল নকশ প্রণয়ন করে যাচ্ছে।
ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মানুচেহের মোহাম্মদি বলেছেন, "ইরান বিরোধী মার্কিন ষড়যন্ত্রকে তিনটি পর্যায়ে বা সময়ে ভাগ করা যায়। প্রথম পর্যায়টি ছিল ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের পর প্রথম দশ বছরে চাপিয়ে দেয়া বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ যেখানে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধ ছিল নরম যুদ্ধ যা কিনা চলে ২০১০ সাল পর্যন্ত। এ সময়টিতে শত্রুরা ব্যাপক অপপ্রচার চালিয়ে ইরানের জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস ও বিপ্লবী আদর্শকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালায়। তৃতীয় পর্যায়ের যুদ্ধে শত্রুরা ইরানের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালায়। এ ভাবে তারা ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে আসছে।"
বলা যায়, বিপ্লবের পর থেকে শত্রুরা ইরানকে দুর্বল করার এবং বিপ্লবকে ধ্বংস করার জন্য এমন কোনো চেষ্টা নেই যা তারা করেনি। এমনকি এ লক্ষ্যে তারা ইরানের জনগণকে তাদের ধর্ম বিশ্বাস ও নিজস্ব জাতীয় সংস্কৃতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার পাশাপাশি পাশ্চাত্যের নোংরা সংস্কৃতি ও জীবন ব্যবস্থাকে ইরানি সমাজে চালু করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। বিভিন্ন প্রচারযন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে শত্রুরা ইরানের জনগণের চিন্তাচেতনাকে এমনভাবে পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে যাতে তারা বিপ্লবী আদর্শ থেকে দূরে সরে যায়।
শত্রুরা মনে করে, যখন ইরানিদের বিপ্লবী আদর্শ ও ধর্মীয় চেতনা ধ্বংস করা যাবে, প্রতিরোধ সংগ্রাম থেকে মানুষ দূরে সরিয়ে রাখা যাবে, সশস্ত্র বাহিনী, বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি ও স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী এবং ধর্মীয় নেতাদের প্রভাব খর্ব করা যাবে কেবল তখনই ইরানি সমাজ ব্যবস্থাকে দুর্বল হয়ে পড়বে। এ কারণে শত্রুরা ইরানের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিভেদের মাধ্যমে শত্রুরা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রধান চালিকা শক্তি অর্থাৎ ধর্মীয় ও বিপ্লবী আদর্শকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
কিন্তু শত্রুদের এত ষড়যন্ত্র সত্বেও ইরানের ইসলামি বিপ্লব দুর্বল তো হয়নি বরং আরো শক্তিমত্বা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে দেশের ভেতরে ও বাইরে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
যাইহোক অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে কোনো জাতি যদি প্রকৃত শত্রুকে চিনতে না পারে তাহলে শত্রুরা তাদের সমস্ত শক্তিকে ধ্বংস করতে সক্ষম হবে। এ কারণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা শত্রুকে চিহ্নিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। iqna