IQNA

নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ভারতীয় মুসলমানদের বিক্ষোভ অব্যাহত; নিহত ৮, আটক সহস্রাধিক

20:55 - December 20, 2019
সংবাদ: 2609870
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে ভারতের জনগণ বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে। মুসলিম জনতার বিক্ষোভে পুলিশের হামলার ফলে এপর্যন্ত ৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও সহস্রাধিক বিক্ষোভকারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় পুলিশের হামলায় ৮ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু শহরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ চলার সময় পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে দুইজন নিহত হয়েছে। লক্ষনৌ পুলিশের লাঠিচার্জ ও হামলার ফলে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এছাড়াও অসমে বিক্ষোভের সময় ৫ জন নিহত হয়েছেন

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে বেঙ্গালুরুতে চার পুলিশ সদস্যকে গুলি চালাতে দেখা গেছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের একটি দলকে লক্ষ করে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার হাসপাতালের কর্মকর্তারা আহত দুইজনের মৃত্যুর খবর জানান।

স্থানীয় একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, এদিন বিকাল থেকেই শহরটিতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিক্ষোভে নামা বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে।

ওদিকে উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌয়ে বৃহস্পতিবার একজনের মৃত্যুর খবর সম্পর্কে বিক্ষোভকারীরা বলেছে, বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন পুলিশের গুলিতে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কথা অস্বীকার করেছে।

সহিংসতার আশঙ্কায় বুধবার রাত থেকেই গোটা উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল প্রশাসন। চারজনের বেশি লোকের জমায়েতের উপর জারি করা হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল ব্যাঙ্গালুরুসহ কর্ণাটকের বিভিন্ন স্থানেও।

বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে ২১ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত ব্যাঙ্গালুরুতে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে বলে জানিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার ভাস্কর রাও। কিন্তু প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাস্তায় নামে জনতা।

নতুন এই আইনের প্রতিবাদে বেশ কয়েকজন হিন্দু কর্মী সহ কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারত সরকারের সমালোচক এবং ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ বলেন যে, বিভিন্ন ধর্মের শত শত অনুসারীর সাথে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল (বেঙ্গালুরুর টাউন হলে বিক্ষোভ চলাকালীন সময় তাকে আটক করা হয়।)। এই থেকে বোঝা যায় যে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অধিকাংশ ভারতীয় নাগরিক বৈষম্যমূলক আইনটির বিরোধিতা করছে।

উল্লেখ্য যে, গত ৪ ডিসেম্বর নাগরিকত্ব সংশোধন বিল অনুমোদন দেয় দেশটির মন্ত্রীসভা। এরপর তা সংসদের উভয়পক্ষে পাস হয়। পরে বিলটিতে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলে তা আইনে পরিণত হয়। এই আইনের ফলে দেশটিতে অবস্থান করা বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান ধর্মের অবৈধ অভিবাসীরা নাগরিক হওয়ার আবেদন করতে পারবে। তবে মুসলিমরা নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। সমালোচকগণ, আইনটিকে ভারতীয় সংবিধান লঙ্ঘনকারী হিসাবে দেখছেন এবং তারা বিশ্বাস করেন যে, জনগণের ধর্ম নাগরিকত্বের ভিত্তি হওয়া উচিত নয়। iqna

 

captcha