IQNA

ইমাম মুসা কাজীমের (আ.) দৃষ্টিতে আল্লাহর ইচ্ছা বলতে কি বুঝায়?

22:41 - May 03, 2016
সংবাদ: 2600708
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে যে, আল্লাহ তার সৃষ্টিকর্মে কোনরূপ উপকরণ ও মাধ্যমের প্রয়োজনবোধ করেন না। তিনি যখনই কোন কিছু সৃষ্টির ইচ্ছাপোষন করেন, তখন কেবল তার ইচ্ছা ও ইঙ্গিতেই তা সাধিত হয়ে যায়। কোরআনের ভাষায়,


"তিনি যখন কোন কিছু ইচ্ছা করেন তখন কেবল বলেন, ‘হও’, আর তা তৎক্ষণাৎ হয়ে যায়।

এক্ষেত্রে মাসুম ইমামগণ (আ.) দুটি বিষয়ের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন, যথা:

    (ক) আল্লাহর ইচ্ছা মানুষের মত নয় যে, তা চিন্তা-ভাবনার পর্যায় অতিক্রম করে সিদ্ধান্তে উপনীত হবে। বরং এমন ক্রমধারার ইচ্ছা কেবল মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং আল্লাহ এমন ইচ্ছার অনেক ঊর্ধ্বে। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছার প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে আমরা সম্যক অবগত নই; তাই এ প্রসঙ্গে চূড়ান্তভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। বিশেষত: যদি আল্লাহর ইচ্ছাকে তার সত্বার সাথে সম্পৃক্ত মনে করি; তবে বিষয়টি আরও আমাদের নাগালের বাইরে যাবে। কেননা আল্লাহর সত্বার বাস্তবতা চিন্তা করার সাধ্য ও ক্ষমতা আমাদের নেই।

    ইমাম মুসা কাজীম (আ.) আল্লাহর ইচ্ছার ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন,

بمشیته من دون تردد فی نفسه

অর্থাৎ আল্লাহ ইচ্ছা সব ধরনের সন্দেহ ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকে মুক্ত।  কাজেই এমন ইচ্ছা মুহূর্তেই বাস্তবায়িত হয়।

    (খ) এ সম্পর্কে আহলে হাদিসের আকীদা হচ্ছে- আল্লাহ কোন কিছু সৃষ্টি সময় ‘হও’ শব্দটি উচ্চারণ করেন। তারা আল্লাহর এ কথাকে তার সত্বা থেকে নির্গত হয়েছে বলে ধারণা করে; যেমনভাবে মানুষের কথা তার সত্বা থেকে নির্গত হয়।   আল্লাহ সম্পর্কে এহেন আকিদার অর্থ হচ্ছে তার শরীর ও আকৃতিতে বিশ্বাস করা; যা অংশিবাদের আকিদা হিসেবে গণ্য। ইমাম মুসা কাজীম (আ.) বলেছেন: আল্লাহর সত্বা থেকে কখনও ’হও’ শব্দটি উচ্চারিত হয় না। কেননা আল্লাহ তার কার্যাদি সম্পন্নের ক্ষেত্রে সব ধরনের মাধ্যম কিংবা উপকরণাদি থেকে অমুখাপেক্ষী। বরং কোন কিছু সম্পন্নের ক্ষেত্রে তার ইচ্ছাই সেটিই সম্পন্ন হওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট।

    উমাইয়া শাসনামলের পুরো সময় ও আব্বাসীয় শাসনামলের একাংশে ‘জাবর বা বাধ্যতা এবং তাফ্ঈজ বা বাধাহীন স্বাধীনতা আকিদার ব্যাপক প্রচলন ছিল। তদানীন্তন শাসকবর্গের অধিকাংশই জাব্র আকিদার সমর্থক ছিল এবং তাদের ক্ষমতার ভিতকে মজবুত করতে এহেন আকিদাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করত। অথচ মাসুম ইমামগণ (আ.) সর্বপ্রথম ইমাম আমিরুল মু’মিনিন আলীর (আ.) পদাঙ্ক অনুসরণ করে মানুষের নিয়মতান্ত্রিক স্বাধীনতার উপর গুরুত্বারোপ করতেন।
ট্যাগ্সসমূহ: কোরআনে ، আল্লাহর ، ইমাম
captcha