IQNA

ছয়টি অপরাধের শিরোনাম যা একজন ব্যক্তিকে জাহান্নামের জন্য প্রস্তুত করে

4:44 - August 20, 2022
সংবাদ: 3472318
তেহরান (ইকনা): মোহাম্মদ আলী আনসারী সূরা কাফ-এর আয়াতের উপর মন্তব্য করতে গিয়ে এই সূরায় বর্ণিত ছয়টি অপরাধের উপাধি তুলে ধরেন যা  একজন ব্যক্তিকে জাহান্নামের শাস্তির যোগ্য করে তোলে। 
পবিত্র কুরআনের মুফাস্সির মোহাম্মদ আলী আনসারী পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যার অনলাইন সেশনে সূরা কাফ নিয়ে আলোচনা করেছেন, যার সারাংশ নীচে তুলে ধলা হল:
এই সূরাতে মানুষ যে সব পর্যায়ের মধ্য দিয়ে নিজের জীবনকে অতিবাহিত করে, মহান আল্লাহ তার ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দুনিয়া ও মৃত্যুর বিষয়টি দিয়ে শুরু করেছেন এবং তারপর বরযাখ বা কবরের জগত নামক দুনিয়ার মধ্য দিয়ে তা অনুসরণ করার কথা ব্যক্ত করেছন এবং বিচার দিবসের প্রবেশদ্বার এবং বিচার দিবসে উপস্থিত থাকার পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন। সূরা কাফের ২৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে: 
 
وَقَالَ قَرِينُهُ هَذَا مَا لَدَيَّ عَتِيدٌ
তার সঙ্গী (ফেরেশতা) বলবে, ‘এটা (তার আমলনামা যা) আমার নিকট প্রস্তুত রয়েছে।’
এই সময়ে, সমস্ত ফাইল এবং কর্মের রেকর্ড কোন সমস্যা ছাড়াই উপস্থাপন করা হবে এবং একটি রায় ঘোষণার জন্য সকলকে প্রস্তুত করা হবে এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহ রায় জারি করেন।
এই রায়ে ছয় ধরণেরে অপরাধের শিরোনাম রয়েছে যা একজন মানুষকে জাহান্নামের অধিকারী হিসেবে গড়ে তোলে।
 
প্রথম: পবিত্র কুরআনের বলা হয়েছে,
 
 أَلْقِيَا فِي جَهَنَّمَ كُلَّ كَفَّارٍ عَنِيدٍ  
 
(আদেশ করা হবে,) ‘তোমরা দু’জন প্রত্যেক অকৃতজ্ঞ, কলহপরায়ণকে জাহান্নামে নিক্ষেপ কর।
 সূরা কাফ, আয়াত ২৪।
কাফের মানে যারা অবিশ্বাসের চরমে রয়েছে এবং কুফরের সমস্ত উপত্যকা অতিক্রম করেছে এবং কোন কুফরী কর্ম ত্যাগ করেনি।
 
দ্বিতীয়: عَنِيدٍ  "অবাধ্য" বা অকৃতজ্ঞ শব্দটি আলোচনাকে সম্পূর্ণ করে। কখনও কখনও হঠকারিতা ও শত্রুতা থেকে অবিশ্বাসের উদ্ভব হয়, অর্থাৎ সে সত্যকে দেখলেও তা গ্রহণ করে না। 
তৃতীয়: আল্লাহ তায়ালা বলেছেন: 
مَنَّاعٍ لِلْخَيْرِ مُعْتَدٍ مُرِيبٍ
যে কল্যাণে বাধাদানকারী, সীমালঙ্ঘনকারী এবং সংশয় সৃষ্টিকারী ছিল।
সূরা কাফ, আয়াত: ২৫। 
مَنَّاعٍ لِلْخَيْرِ  এর অর্থ এমন কেউ যে অনেক ভালো কাজের বাধা দেয়।
 
ইতিহাস জুড়ে "ভালো কাজের বাধা দেওয়া” এর দুটি উদাহরণ:
প্রথম দিন থেকেই তারা ছিল এমন একটি দল যারা মানুষকে ঈমান আনা থেকে বিরত রাখত এবং মানুষকে ইসলামে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখার জন্য ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রতারণার সমস্ত উপায় ব্যবহার করত। এটাই প্রথম ধাপ ছিল। ইতিহাস জুড়ে এই পদ্ধতি অব্যাহত রয়েছে। আমাদের সময়ে, মানব সমাজের স্তরে মানুষ যাতে উত্তম আচার-অনুষ্ঠানে না আসে, সেজন্য শত্রুরা প্রতিদিন অনেক অর্থ ব্যয় করে? দ্বিতীয় উপায় হচ্ছে, মানুষ যদি মুসলমান হয়ে যায়, তাহলে এমন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়, যা তাদের ইসলামের সত্য অনুশীলনে বাধা দেয়,, অর্থাৎ, কেউ যদি ঈমান আনে এবং তাহলে শত্রুরা সর্বদা এই চেষ্টা করে যাতে সে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকে।
 
চতুর্থ:  বর্তমান সমাজে দেখা যায় যে, একদল লোক আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। আসলে আগ্রাসী মানে কি? সংক্ষিপ্তভাবে যদি বলতে চাই তাহলে আগ্রাসীর দুটি অর্থ রয়েছে। প্রথমত: মহান আল্লাহর অধিকার লঙ্ঘন করা এবং দ্বিতীয়ত: বান্দাদের অধিকার লঙ্ঘন করা।
 
পঞ্চম: অপরাধ করা। এটি অপরাধমূলকভাবে "অপবাদমূলক"। আরবীতে مریب  মারিব বলে একটি শব্দ রয়েছে। আর এটি মূলত ریب হতে এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে সন্দেহ। মানুষের সন্দেহের মূল যদি সত্য-অনুসন্ধান হয়, তবে তা স্বাগত জানানো হয়, শর্ত হচ্ছে মানুষকে সত্যের দিকে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু ریب রিব এমন একটি জায়গা যেখানে সন্দেহ অপবাদ এবং ধ্বংসের সাথে জড়িত, সত্য-সন্ধান এবং সচেতনতার সাথে নয়। 
ষষ্ঠ: 
الَّذِي جَعَلَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ...
যে আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্য সাব্যস্ত করত, তোমরা দু’জন তাকে কঠোর শাস্তিতে নিক্ষেপ কর।
সূরা কাফ, আয়াত: ২৬। 
এখানে অপরাধের মোট ৬টি শিরোনাম উত্থাপিত হয়েছে। আমাদের সকলের উচিত এই ছয়টি কর্মকে পরিহার করে মহান আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হওয়া।  4077252
 
captcha